শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। সোনোরান মরুভূমিতে বসবাসকারী এক বিশেষ প্রজাতির ব্যাঙের ত্বকে এক ধরণের বিষ থাকে, যার নাম 5-MeO-DMT। এই বিষ আসলে এক ধরণের হ্যালুসিনোজেন, যা মানুষের মনে চেতনার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই হ্যালুসিনোজেনকে কাজে লাগিয়ে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এমনকি মানসিক আঘাত থেকে সৃষ্ট সমস্যার (PTSD) মতো জটিল মানসিক রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
কিন্তু সমস্যা হলো, এই বিষ শুধুমাত্র ওই বিশেষ প্রজাতির ব্যাঙের ত্বকেই পাওয়া যায়। তাই ওষুধ তৈরির জন্য প্রচুর পরিমাণে ব্যাঙের বিষ সংগ্রহ করতে হচ্ছে, যার ফলে ব্যাঙের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এছাড়াও, ব্যাঙ থেকে বিষ সংগ্রহের প্রক্রিয়া ব্যাঙের জন্য কষ্টদায়ক এবং ক্ষতিকর। তাই পরিবেশবাদীরা এবং প্রাণীপ্রেমীরা এর তীব্র বিরোধিতা করছেন।
এই সমস্যার সমাধান হিসেবে বিজ্ঞানীরা এখন 5-MeO-DMT কৃত্রিম উপায়ে তৈরির চেষ্টা করছেন। এতে একদিকে যেমন ব্যাঙের ক্ষতি হবে না, তেমনি চাহিদা মতো ওষুধ তৈরি করাও সম্ভব হবে।
কৃত্রিমভাবে তৈরি 5-MeO-DMT নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে এবং প্রাথমিক ফলাফল বেশ আশাপ্রদ। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই ওষুধ মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করে, যা বিভিন্ন মানসিক রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এখনও আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে এই ওষুধের কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য।
এই গবেষণার সাথে সাথে 5-MeO-DMT কে বৈধ করার দাবীও উঠছে। অনেক দেশেই এই ওষুধ এখনো অবৈধ। কিন্তু গবেষণায় এর ইতিবাচক ফলাফল দেখে মানুষ এর ব্যবহার বৈধ করার দাবী জানাচ্ছে।
5-MeO-DMT নিয়ে গবেষণা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও, এর সম্ভাবনা অনেক। যদি বিজ্ঞানীরা এই ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন এবং এটি নিরাপদে ব্যবহারের উপায় বের করতে পারেন, তাহলে মানসিক রোগের চিকিৎসায় এটি এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে।