আইপিএল ২০২৪ এ চেন্নাই সুপার কিংস নিজেদের দ্বিতীয় জয়টিও পেল দুর্দান্ত ভাবে। ব্যাট এবং বলে অসাধারণ খেলে তারা গুজরাট টাইটান্সকে সম্পূর্ণরূপে ছাপিয়ে গেল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানদের একের পর এক আগ্রাসী ইনিংস আর তারপর বোলারদের দাপটে সামলানো দায় হয়ে পড়েছিল গুজরাটের কাছে। শেষ পর্যন্ত ৬৩ রানে হেরে যায় তারা।
ওপেনিংয়ে রবীন্দ্রর আগ্রাসী ইনিংস
চেন্নাইকে শুরুতেই ভিত গড়ে দেন রাচিন রবীন্দ্র দুরন্ত ব্যাটিং করে । পাওয়ারপ্লেতে তিনি রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের সঙ্গে প্রথম উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়ে তোলেন । একের পর এক উমেশ যাদবের শর্ট বলগুলোকে সীমানার ওপার পাঠিয়ে দিতে থাকলেন রবীন্দ্র। পরের ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকেও একই রকম মারলেন তিনি। উমেশ আবার শর্ট বল করতে এলে, তাতেও ছক্কা আর চার মারলেন রবীন্দ্র। ওমরজাইকেও ছেড়ে কথা বললেন না। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ৪৭ রান করে আউট হয়ে গেলেও রবীন্দ্রর এই আগ্রাসী ব্যাটিং চেন্নাইকে ভীষণ গতি এনে দিয়েছিল।
রবীন্দ্রর পর আজিঙ্কা রাহানে আউট হলেও গায়কোয়াড়ের একপ্রান্তে জমে বসেছিলেন। ৪৬ রান করে স্পেন্সার জনসনের বলে আউট হন গাওয়াকওয়াদ।
দুবের ঝড়
চেন্নাইয়ের পরের ব্যাটসম্যান ছিলেন শিবম দুবে, যিনি শুরু থেকেই আগুন ঝরাতে শুরু করলেন। সাই কিশোরের বাঁহাতি স্পিনের বিরুদ্ধে একেবারে প্রথম দুটি বলকেই ছক্কার মেরে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দিলেন । এরপর থেকে গুজরাটের কোনো বোলারই তাকে সামলাতে পারলেন না। রশিদ খানকে পর্যন্ত ছক্কা মারলেন! জনসনের শর্ট বলগুলোকেও চার আর ছক্কার বৃষ্টিতে ভাসিয়ে দিলেন। মাত্র ২২ বলে পঞ্চাশ রান তুলে নিলেন দুবে।
গুজরাট ভেবেছিল শেষের দিকে কিছুটা ব্রেক লাগানো যাবে, কিন্তু রাশিদ খানের ওভারে দুবেকে আউট করার পরও নতুন ব্যাটসম্যান সামির রিজভি তা হতে দিলেন না। নিজের আইপিএলের প্রথম বলেই রাশিদকে দুটো ছক্কা মারলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চেন্নাই ২০০ রানেরও বেশি করে ফেলল।
লড়াই করার সুযোগই পায়নি গুজরাট
২০০-র ওপর রান তাড়া করতে নেমে লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে হলে গুজরাটের পাওয়ারপ্লেতে দুর্দান্ত শুরু করা দরকার ছিল। শুভমান গিল এবং ঋদ্ধিমান সাহা সেই ইচ্ছেটা দেখালেনও, গিল তো প্রথম বলেই ছক্কা মারলেন, কিন্তু টিকতে পারলেন না। দীপক চাহার গিলকে lbw আউট করলেন এবং সাহাকেও আউট করে দিলেন। মাত্র ৩৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে গুজরাট প্রচণ্ড চাপে পড়ে গিয়েছিল।
চেন্নাইয়ের বোলারদের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ
গুজরাটের কোনো ব্যাটসম্যানই এই চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এরসঙ্গে চেন্নাইয়ের ফিল্ডাররা দুর্দান্ত ফিল্ডিং করে চাপ আরও বাড়িয়ে দিল। মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং আজিঙ্কা রাহানে দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেন, রাচিন রবীন্দ্র একটা ক্যাচ ফেললেও পরে আরও তিনটে ক্যাচ নিয়ে সেটা শুধরে দিলেন। শেষপর্যন্ত কোনোভাবেই সামাল দিতে পারল না গুজরাট।
এরপর চেন্নাই ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচ খেলতে যাবে ভাইজাগে, যেটা দিল্লি ক্যাপিটালসের অস্থায়ী ‘হোম’ গ্রাউন্ড। একই দিনে – রবিবার, ৩১ মার্চ – গুজরাট টাইটান্স নিজেদের মাঠে ফিরে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মোকাবিলা করবে।
সংক্ষিপ্ত ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ২০৬/৬, ২০ ওভারে (শিবম দুবে ৫১, রাচিন রবীন্দ্র ৪৬, রুতুরাজ গায়কওয়াড় ৪৬) বনাম গুজরাট টাইটান্স ১৪৩/৮, ২০ ওভারে (সাই সুদর্শন ৩৭; তুষার দেশপান্ডে ২-২১) । চেন্নাই সুপার কিংস ৬৩ রানে জিতেছে।