গত কাল জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি পিটিশন ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট একটি নোটিশ জারি করেছে।যেখানে বলা হয়েছে , আগে যেখানে একটি লোকসভা আসনের মধ্য থেকে এলোমেলো ভাবে শুধুমাত্র 5টি ভেরিফাইড পেপার অডিট ট্রেল (VVPAT) গণনা করা হত এবার থেকে তার পরিবর্তে সব কটি VVPAT গণনা করতে হবে ।
বিচারপতি বিআর গাভাই এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ একই ধরনের আবেদন চেয়ে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের দায়ের করা আরেকটি পিটিশনের সাথে এই পিটিশনটিকে ট্যাগ করে আদেশটি দিয়েছে।
পিটিশনটি ইলেকশন কমিশনের VVPAT সংক্রান্ত গাইডলাইনকেও চ্যালেঞ্জ করেছে । VVPAT যাচাইকরণ দ্রুত এবং ধারাবাহিক ভাবে করতে হবে। এতদিন ইলেকশন কমিশন মাত্র চারটি বা পাঁচটি VVPAT স্লিপ কাউন্টিং করলেও তা দীর্ঘ সময় লাগিয়ে দেয় এই পিটিশনে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে যে , যদি সিরিয়াল অনুসারে যাচাই করা হয় এবং প্রতিটি আসনে আরো বেশি অফিসার নিয়োগ করা হয়, তাহলে সম্পূর্ণ VVPAT যাচাই প্রক্রিয়া ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।
প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা খরচ করে প্রায় ২৪ লাখ VVPAT কিনেছে সরকার, কিন্তু গণনা করা হয় কেবল মাত্র ২০,০০০ VVPAT এর কাগজের ।
VVPAT এবং EVM সম্পর্কে নানান বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন । অতীতে ইভিএম এবং VVPAT ভোট গণনার মধ্যে বিপুল সংখ্যক বৈষম্যের পরিলক্ষিত হয়েছে তার দ্বারা এটি স্পষ্ট যে সমস্ত VVPAT স্লিপ গণনা করা এক্ষেত্রে অপরিহার্য ।
পিটিশনকারী যে চারটি প্রধান দাবি করেছেন:
(i) ইলেকশন কমিশনকে EVM গণনা করার সাথে VVPAT-এর মাধ্যমে ভোটার দ্বারা যাচাইকৃত ‘কাস্ট ভোট’ রেকর্ড করে তা আবশ্যিকভাবে সমস্ত VVPAT কাগজের স্লিপগুলি গণনা করে মিল আছে কিনা প্রকাশ করতে হবে ।
(ii) 14.7(h) নং নির্দেশিকা অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ম্যানুয়াল এবং এলোমেলো ভাবে শুধুমাত্র 5টি VVPAT গননার যে নির্দেশিকা রয়েছে তা বাতিল করতে হবে ।
(iii) যে ইসিআই একজন ভোটারকে একটি ব্যালট বাক্সে VVPAT মেশিন থেকে বের হওয়া VVPAT স্লিপটি সরাসরি ব্যালট বাক্সে ফেলার অনুমতি দিতে হবে ।
(iv) VVPAT মেশিনের কাচ স্বচ্ছ করা এবং ভোটার তার ভোটের কাগজ কাটা এবং ড্রপ বক্সে পড়ার দৃশ্য যাতে যথেষ্ট ভাবে দেখতে পারে তার জন্য আলোর সময় বাড়াতে হবে ।
নির্বাচন কমিশন এর আগে একই রকম একটি পিটিশনে সব VVPAT যাচাই করার ব্যাপারে বাস্তব সমস্যা তুলে ধরেছিল।
সব VVPAT যাচাই হলে এই নির্দেশ ভারতীয় গণতন্ত্রের স্বচ্ছতার প্রশ্নে একটি ল্যন্ডমার্ক হয়ে থাকবে । এর ফলে ভোটারদের ভোট প্রক্রিয়ার উপরে যে বিশ্বাস বাড়বে তা নিশ্চিত করে বলা যায় । সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন গুলি স্বাগত জানিয়েছে ।