রাহুল গান্ধীকে এবার অবসর নেওয়ার পরামর্শ দিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর ।
পিটিআই এর সাথে এক আলাপচারিতায় তিনি বলেন, বাস্তবিক অর্থে রাহুল গান্ধী গত দশ বছর ধরে তার দল চালাচ্ছেন । তাঁর এই দশ বছরের সময়কালে কংগ্রেসের কোনো উন্নতি তিনি দেখাতে পারেননি এবং কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়াবার জন্য যে নতুন ইনিশিয়েটিভ নেওয়ার দরকার ছিল তা তিনি নেননি ।অথচ সোনিয়া গান্ধীকে দেখুন রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর তিনি পি ভি নরসিনহা রাওকে দ্বায়িত্ব ছেড়ে দেন । তাই তাঁর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস যদি এবারেও উল্লেখযোগ্য কোনো ভালো ফল না করতে পারে তবে রাহুল গান্ধীকে একটু সরে এসে ভাবা উচিৎ ।
বিশ্বের সব বড় নেতারা এটাই করেন । নিজের অসম্পূর্ণতাকে আগে চিহ্নিত করেন তারপর কীভাবে তা মেটানো যায় তা ভাবেন । রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রে এমনটা নয় তিনি যেটা ভাবেন সেটাই করেন অন্যদের মতামতের গুরুত্ব ক্ষীণ , এটাও একপ্রকারের অগণতন্ত্র । তাঁকে পরামর্শ দেওয়ার লোকের তাঁর কাছে প্রয়োজন নেই , তাঁর প্রয়োজন শুধু তাদের যারা তাঁর সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করবে ।
রাহুল গান্ধী 2019 সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের হারের পর দলের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন, তিনি লিখেছিলেন যে তিনি পিছিয়ে এসে অন্য কাউকে কাজ করতে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে, তিনি তাঁর লেখার বিপরীত কাজ করেছেন।
অনেক কংগ্রেস নেতা ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেন যে, দলের মধ্যে একটি আসন বা জোটের সাথে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তাঁরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না , যদি তা রাহুল গান্ধীর অনুমোদন না পায়। তবে দলের একটি অংশ বলে যে পরিস্থিতি আসলে বিপরীত এবং তারা চায় রাহুল গান্ধী যেন সিদ্ধান্ত নেন যা করার তিনিই করেন ।
বিকল্প হিসাবে আপের উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আপকে দেখুন তারা দিল্লীর গন্ডিই ছাড়িয়ে একটি আঞ্চলিক দল থেকে আস্তে আস্তে অন্যান্য রাজ্যে ক্ষমতা বিস্তার করে সর্বভারতীয় দল হয়ে উঠছে , বাস্তবিকই আপ আগামীর ভারতের একটি বড় সর্বভারতীয় দল হতে যাচ্ছে । দিল্লী মডেলকে ব্যবহার করে তারা ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবে সফল, অন্য রাজ্যগুলিতেও ক্ষমতা বাড়াচ্ছে । কংগ্রেসের নানান ভুল পরিকল্পনার ফলে বিরোধী দল হিসাবে যে গ্যাপটা তৈরি হয়েছে আপ সেইটা ধরেছে ।
তবে রাহুল গান্ধীর ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা আছে , তাঁর ‘গান্ধী’ পদবি । বিজেপি ভীষণ জোরদার ভাবে মানুষের মনে ‘পরিবারবাদ’ শব্দটা গেঁথে দিতে পেরেছে । কংগ্রেসের সমর্থক নেতা কর্মীদের রাহুল গান্ধীকে নেতা হিসাবে মেনে নিতে সমস্যা হয়নি তবে সাধারণ মানুষ এখনো রাহুল গান্ধীকে সেভাবে গ্রহণ করতে পারেনি । অবশ্য এই ‘পরিবারবাদ’ এর আক্রমণের ঝড় শুধু যে রাহুল গান্ধিকেই সামলাতে হচ্ছে এমন নয় অখিলেশ যাদব বা তেজস্বী যাদব এদের সকলের ক্ষেত্রে একই প্রবলেম ।