তেলেঙ্গানার কান্নেয়াপাল্লি গ্রামে Blessed Mother Teresa High School নামক এক মিশনারি স্কুলে আক্রমণ করে গেরুয়া বস্ত্র পরিহিত কিছু লোক। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে তারা কীভাবে স্কুলের মধ্যে তাদের ভাঙচুর কার্য চালাচ্ছে এবং স্কুলের আধিকারিরক দু জন মহিলা ভয়ে এক কোণে শিটিয়ে আছে। পুলিশ সেই আক্রমণকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও এক পড়ুয়ার অভিভাবকের কথা মত স্কুলের প্রিন্সিপাল জেমন ( jaimon) জোসেফ এবং দুজন কর্মীর বিরুদ্ধে FIR গ্রহণ করেন।
We are appalled by the recent attack on St. Mother Teresa English Medium School in Telangana's Mancherial district. The vandalism and assault on Father Jaimon Joseph, over baseless accusations, are abhorrent and unjustifiable. We urge the authorities to swiftly bring the… pic.twitter.com/BxFgGaP5cn
— CPI (M) (@cpimspeak) April 18, 2024
প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠে যে প্রিন্সিপাল অন্য ধর্মের ভাবনায় আঘাত করেছে এবং দুই ধর্মের মধ্যে সাম্প্রদায়িক শত্রুতা তৈরি করেছেন। ঘটনাটি এমন ঘটেছিল যে দু দিন আগে বিদ্যালয় কিছু পড়ুয়া গেরুয়া পোশাক পড়ে স্কুলে এসেছিল। ধর্মীয় পোশাক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ে আসার কারণে কেরালার বাসিন্দা প্রিন্সিপাল জোসেফ এর কারণ জানতে চাইলে পড়ুয়ারা উত্তর দেন যা তা ২১ দিনের জন্য “হনুমান-দীক্ষা” প্রথা পালন করছে। তাই তারা এই গেরুয়া পোশাক পড়ে এসেছে। প্রিন্সিপাল তাদের অভিভাবক দের দেখা করতে বলেন এবং তিনি জানান যে তিনি তাদের অভিভাবকদের সাথে এই বিষয় কথা বলবেন। ঘটনাটির পারদ চড়ে যখন কেউ একজন গোটা ব্যাপারটি সোশাল মিডিয়া এ আপলোড করে বলেন যে প্রিন্সিপাল নাকি বিদ্যালয় স্থলের মধ্যে হিন্দু ধর্মের পোশাক পড়তে বাধা দান করছেন । এর কিছুক্ষণের মধ্যেই একদল গেরুয়া পোশাক পড়া মানুষ “জয় শ্রী রাম” স্লোগান দিতে দিতে স্কুলে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে, প্রিন্সিপাল এর গা-এ হাত তুলতেও ছাড়ে না তারা। ভিডিওতে দেখা যায় তারা মাদার টেরেসার মূর্তিতেও পাথর ছুড়ে সেটাকে ভাঙার চেষ্টা করছেন।
Chanting Jai Sri Ram slogans Sangh activists attack Catholic school in Mancherial, Telengana. Principal Father Jaimon Joseph from Kerala was beaten up and tilak applied on his forehead. Mother Theresa statue vandalized. pic.twitter.com/YWQdxv7Bbu
— aby (@abytharakan) April 17, 2024
আমির আজিজ তার কবিতায় লিখেছিলেন,” রাত্রি হলেই অধিকার দাবিতে গুলি আর লাঠির বাড়ি / যাদের গায়ে আঘাত চিহ্ন তাদের বলা বদমাইশের ধারি… সব মনে রাখা হবে/ সব কিছু মনে রাখা হবে… ” এক্ষেত্রেও দেখা গেল ঠিক একই ঘটনা। যে সমস্ত গেরুয়া গুন্ডাবাহিনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করল তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ তো কোনো পদক্ষেপ নিলই না বরং প্রিন্সিপার বিরুদ্ধে জারি করল FIR. এক দেড় বছর আগেই হিজাব পড়ে যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়াকে নিষিদ্ধ করে বিজেপি , আর এখন গেরুয়া পড়ে স্কুলে এলে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই ভাঙচুর ,গায়ে হাত, গুন্ডাগিরি তার ওপর পুলিশি হ্যারাস্মেন্ট। এই রাষ্ট্রের হিন্দু মেজোরেটেরিয়ান স্টেট হতে আর কতটা পথ পেরোতে হবে সেটা ভাববার বিষয়। আদেও কি আর পথ পেরোতে হবে সেটা ভাবনার সুচীতে অন্তর্গত করতে হবে। রামনবমীর দিনে যখন বিজেপির নেতারা রামকে ভারতীয় সংস্কৃতি বলে অস্ত্রমিছিল , ভোট প্রচার চালাচ্ছিল… সেই জয় শ্রী রাম স্লোগানের আওয়াজেই ভাঙচুর করা হল তেলেঙ্গানার এই মিশোনারি স্কুল। যদিও এই ঘটনা নতুন কিছু না। এই জাতীয় ঘটনা দেশে গত কিছু বছর ধরে হামেশাই ঘটে চলেছে। এবার রাজনৈতিকভাবে নিরাপদ ক্ষেত্রে থাকার জন্য যদি বলা হয় যে গেরুয়া পোশাক পড়া গুন্ডাদের সাথে বিজেপির কোনো যোগসূত্র নেই তাহলে তাকে ভণ্ডামি বলা হবে।