মিষ্টি খেতে কার না ভালো লাগে । আমরা সকলেই মিষ্টি খেতে ভীষণই ভালোবাসি । আর সেই মিষ্টি যদি গুড় হয় তাহলে তো কথাই নেই। মাত্র কয়েক দশক আগেও মিষ্টি বলতে মানুষ গুড় বাতাসা রসোগোল্লা এসব হাতে গোনা অল্প কয়েকটি মিষ্টিই বুঝতো , আর আজকাল হাজার রকমের মিষ্টির ছড়াছড়ি । মিষ্টির রকমের যত বৈচিত্র বেড়েছে ঠিক তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভেজাল । আজকাল ভেজাল মুক্ত মিষ্টির কথা ভাবাটাই যেন এক দুঃসাধ্য ব্যাপার । এই মাত্রাতিরিক্ত ভেজাল খাওয়ার জন্য স্বাভাবিক ভাবেই বেড়েছে সুগার কোলেস্টেরলের মত রোগ । অথচ নির্ভেজাল আখের গুড় অনেক সুস্বাদু এবং খাদ্যগুণ সম্পন্ন হলেও আমরা তাকে ব্রাত্য করে রেখেছি নতুন মিষ্টির ভিড়ে । চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক আখের গুড় আমাদের জন্য ঠিক কতটা উপকারী ।
চিনি তৈরির সময় যে ঘন, কালো রস তৈরি হয় তাই আখের গুড়। শুধু গুড়ই নয়, এটি পুষ্টির এক আকর। আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো জরুরি মিনারেলের সাথে ভিটামিন বি6 , সেলেনিয়ামও পাওয়া যায় আখের গুড়ে। শরীরের হাড় মজবুত করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর জুড়ি মেলা ভার। শরীরে আয়রনের অভাব বা অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন যারা, আখের গুড় প্রাকৃতিকভাবেই আয়রন বাড়াতে সাহায্য করে।
শুধু পুষ্টিগুণই নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে ফেনলিক কম্পাউন্ডের উপস্থিতি আখের গুড়কে আরও কার্যকর করে তোলে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বা ইনফ্ল্যামেশন, যা ক্যান্সার বা হার্টের মতো মারাত্মক রোগের কারণ, তা রুখতে পারে আখের গুড়। ম্যাগনেশিয়াম হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের গোলযোগ কমাতে এর ভূমিকা আছে। আবার গুড়ের শর্করা আস্তে আস্তে শরীরে যায়, ফলে হঠাৎ রক্তের সুগার বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না , যেখানে চিনির একেবারে বিদ্যুতের মত কাজ করে ফলে বিপদের কারণ হয়ে ওঠে ।
কিন্তু আখের গুড়ের এই উপকারিতার সাথেই জড়িয়ে আছে বাজারে থাকা নকল ভেজাল গুড়ের আধিপত্য। চিনির চেয়ে সস্তা, নকল মিষ্টির সিরাপকেই কালো রঙ, কৃত্রিম ফ্লেভার দিয়ে আখের গুড় বলে চালানো হয়। শুধু যে এই নকল গুড়ের কোনো পুষ্টিগুণ নেই তাই নয়, এটি স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভীষণ ক্ষতিকারক।
তাই গুরুত্বপূর্ণ হলো আসল আখের গুড় কিভাবে পাবেন । প্রথমে চেষ্টা করবেন সরাসরি চাষির সাথে যোগাযোগ করে তাঁর থেকে তৈরি গুড় নেওয়ার নয়তো বিশ্বস্ত দোকান থেকে কেনা, লেবেলে উপাদান ভালো করে পড়ে নিতে পারেন ।