ভারতের ইলেকট্রনিক্সের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে বিরাটভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আরও একটি পদক্ষেপ নেওয়া হল। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটে দুটি এবং আসামে একটি সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এই তিনটি প্রকল্পেই প্রায় ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
এর মধ্যে দুটি কারখানা স্থাপন করছে টাটা গ্রুপ। কারখানাগুলি খুব শীঘ্রই তৈরি হতে শুরু করবে। ভারতের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প এখনও খুবই নতুন পর্যায়ে রয়েছে এবং বেশ কিছু দেশী-বিদেশী সংস্থাগুলি এই শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ঘোষণা করা হয় ‘সেমিকন্ডাক্টর এবং ডিসপ্লে ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্টের’ কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে ৭৬,০০০ কোটি টাকার বরাদ্ধ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে তিনটি সেমিকন্ডাক্টর ইউনিটের শিলান্যাস করলেন, সেগুলি হল:
- টাটা ইলেকট্রনিক্স প্রাইভেট লিমিটেড (TEPL), তাইওয়ানের পাওয়ারচিপ সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কর্প (PSMC)-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বে গুজরাটের ধোলেরাতে একটি সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব স্থাপন করবে। এই ফ্যাবে বিনিয়োগের পরিমাণ ৯১,০০০ কোটি টাকা।
- গুজরাটের সানন্দে সিজি পাওয়ার, জাপানের রেনেসাস ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন এবং থাইল্যান্ডের স্টারস মাইক্রোইলেকট্রনিক্স-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বে একটি সেমিকন্ডাক্টর ইউনিট স্থাপন করবে। এই ইউনিটে ৭,৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
- টাটা সেমিকন্ডাক্টর অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড টেস্ট প্রাইভেট লিমিটেড (TSAT) আসামের মরিগাঁওয়ে একটি সেমিকন্ডাক্টর ইউনিট স্থাপন করবে। এই কারখানাটি তৈরি করতে খরচ হবে ২৭,০০০ কোটি টাকা। এই ইউনিটে মোটরগাড়ি, বৈদ্যুতিক গাড়ি, যোগাযোগের উপযোগী যন্ত্রপাতি, টেলিযোগাযোগ ও মোবাইল ফোনের জন্য চিপ তৈরি হবে।
এই ইউনিটগুলি চালু হলে প্রত্যক্ষভাবে ২০ হাজার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ৬০ হাজারের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। মোটরগাড়ি, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি, টেলিযোগাযোগ ও শিল্প ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়বে।
এদিকে মার্কিন চিপ প্রস্তুতকারক মাইক্রন গুজরাটের সানন্দে যে উচ্চমানের সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কারখানা বানাচ্ছে, সেটি বেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে এটি চালু হবে। এই কারখানাটিই হবে ভারতের প্রথম সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কারখানা।
ভারত সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের বিশ্ব মানচিত্রে নিজের জন্য একটি বড় জায়গা তৈরি করতে চাইছে, সরকারের এই সব পদক্ষেপ সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।