অরবিন্দ কেজরিওয়াল শুধু একজন ব্যক্তি নয়, তিনি নিজেই একটি ইন্সটিটিউশন একটি আদর্শ । দিল্লির মন্ত্রী আতিশি বলেছেন, আমাদের ধরে নিতে হবে যে এই ধরণের ঘটনা আগামী দিনগুলিতে আরও বেশি বেশি ঘটবে । আপের দিল্লি এবং পাঞ্জাব দুই জায়গাতেই আমাদের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যৌথ ভাবে লড়াই করতে হবে । আপ যদি এই আঘাত সহ্য করে কেজরিওয়াল মুক্তি পাওয়ার পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, তাহলে আপ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কেজরিওয়াল একজন মহানায়কের মত নেতা হিসেবে ফিরে আসবেন। তবে যদি আপ এই দুঃসময়ে তাঁর অনুপস্থিতিতে দিকভ্রষ্ট হয় , তাহলে সেটা রাজনৈতিক ভাবে আপকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেবে । কেজরিওয়ালের আদর্শ ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। এই কারণেই মোদি সরকার তাকে এবং তার দলকে দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়েছে । সাধারণ মানুষ জানে কারা চোর কারা দুর্নীতিগ্রস্ত ।
শেষ এক দশকে বিজেপি দেখেছে কেজরিওয়ালের আদর্শ কীভাবে দিল্লী পাঞ্জাব ছাড়িয়ে গোটা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ।পাঞ্জাব জয় করেছে, গুজরাতে ভালো করেছে এবং মিউনিসিপাল নির্বাচনেও দারুন ফলাফল বিজেপিকে আপকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করতে বাধ্য করেছে।
যদি বিজেপি সফল হয় এবং আপ যদি এই ধাক্কা সামলাতে না পারে তাহলে এটি জাতীয় রাজনীতিতে একটি বড় সম্ভাবনার ক্ষেত্র বিনষ্ট হবে । তৃণমূল কংগ্রেস, কে. চন্দ্রশেখর রাও-এর ক্ষমতায় থাকা সময়ের নানান ব্যর্থতা এবং বাম দলগুলির ক্ষমতা ক্ষীণ হয়ে যাওয়ার মাঝে আঞ্চলিক দল হিসাবে কেবল আপই এমন একটি দল যার তাদের ক্ষমতা বাড়িয়েছে ফলত কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার সেই সম্ভাবনা আরও বাড়াবে না বিনাশ হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যায় না ।
কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের ঘটনায় কংগ্রেসের সাথে তার ও তার দলের সম্পর্কের আরও উন্নতি হয়েছে । কংগ্রেস যে কেজরিওয়ালের রক্ষা করছে তা দেখে অবাক হতে পারেন কিন্তু এটি বুঝতে হবে যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা একসাথে ঐক্যবদ্ধ। কংগ্রেস জানে যে বিজেপির পরের লক্ষ্য তারা হতে পারে এবং ভারতের একদলীয় গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার তারাই এখনো একমাত্র বাধা।
আপের বিরুদ্ধে বিজেপির এই আক্রমন ভারতের সাধারণ জনগণের মধ্যে স্পষ্ট ভাবে দুটি বিভাজন তৈরি করেছে – এনডিএ বনাম ইন্ডিয়া । ইন্ডিয়া জোটের কাছে তাই কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার তাই কিছুটা হলেও এন্ডভান্টেজ দেবে । গোটা ভারত জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কেজরিওয়ালের ইমেজ যথেষ্ট স্বচ্ছ , অনেকেই তাই এই গ্রেপ্তারীকে ভালোভাবে নেয়নি ।