মণিপুরে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (NRC) বাস্তবায়নের প্রসঙ্গে কংগ্রেস এক সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছে , যেখানে সারা ভারত জুড়ে তারা এন এর সির বিরোধিতা করছে সেখা তারা মণিপুরে NRC-র পক্ষে সওয়াল করছে ।
মণিপুর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী এ. বিমল আকোইজাম সম্প্রতি ThePrint-এ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, NRC –কে যদি CAA-র থেকে পৃথক করা হয় তাহলে কংগ্রেস এতে আপত্তি জানাবে না।
মনিপুর সংঘাত গত এগারো মাস ধরে ভুমিপুত্র সংঘাতে উত্তাল । এই পরিস্থিতিতে বিজেপি মণিপুরে NRC বাস্তবায়নের প্রশ্নে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে এমতবস্থায় কংগ্রেস প্রার্থীর এই মন্তব্য ঘিরে জল্পনা বাড়ছে ।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক আকোইজাম বলেছেন, NRC নিয়ে কংগ্রেসের আপত্তি মূলত CAA-এর সাথে যুক্ত করার ফলে যে সমস্যা তৈরি হবে তা নিয়েই । তিনি বলেন, NRC –র বিরোধিতা তো আগেও করা হয়নি , বিরোধিতা করা হচ্ছে CAA নিয়ে ।
২০২২ সালের আগস্টে, মণিপুর বিধানসভা অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে তাদের বিতাড়নের দাবিতে NRC বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। পূর্বের প্রস্তাবটির সমর্থনে গত মাসে মনিপুর বিধানসভা আরেকটি প্রস্তাব পাস করে।
তবে প্রস্তাব পাসের আগে পাঁচ কংগ্রেস এমএলএ ওয়াকআউট করে। যে জন্য বিজেপি দাবি করে কংগ্রেস NRC-এর বিরোধিতা করছে । কংগ্রেসের রাজ্য ইউনিট পরে জানায়, তাদের এম এল এ-রা NRC-র বিরোধিতা করেনি বরং স্পিকারের NRC সহ বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করার অনুরোধ না মানায় তারা ওয়াকআউট করে।স্বাভাবিক ভাবেই NRC-র প্রশ্নে মনিপুরে কংগ্রেসের যে স্পষ্ট সমর্থন আছে তা বোঝা যায় ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আসামে ‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জী’ (NRC) প্রকাশের পর থেকেই দেশজুড়ে তীব্র বিতর্ক ও আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলন কেবলমাত্র ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
এনআরসি হলো ভারতের নাগরিকদের তালিকাভুক্ত করার একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারত সরকার নির্ধারণ করতে চায় কে ভারতের বৈধ নাগরিক এবং কে নয়।
কংগ্রেস সারা ভারত জুড়ে এই আন্দোলনকে সমর্থন দিলেও মণিপুরের ক্ষেত্রে তাদের এই দ্বিচারিতা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উঠেছে । কংগ্রেসের সর্বভারতীয় স্তর থেকে এ বিষয়ে অবশ্য এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।