গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে SSC মামলার শুনানির পর সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে প্রাথমিক ২৫৭৫৩ জন চাকরিহারা চাকরি ফিরে পায়। তাই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জী থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবসু প্রত্যেকেই এই রায় এ খুশী হয়ে উৎফুল্লতা প্রকাশ করেছে।
হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ২৫৭৫৩ জন যোগ্য-অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর থেকে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গেছিল। অনেকেই হাই-কোর্টের এই অদ্ভুত ও অমানবিক রায় নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা করেছিল। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না করা যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ২৫৭৫৩ জন এর চাকরি আপাতত ফিরিয়ে দেয়। এই সিদ্ধান্তে মমতা ব্যানার্জী তার এক্স হ্যান্ডেলে ট্যুইট করে বলেন “ন্যয়ের জয় হয়েছে।” ” আমি আদালতের এ বিচারে সত্যিই খুব খুশী হয়েছি এবং মানষিক ভাবে স্বস্তি পেয়েছি।” শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ” আমরা সুপ্রিম কোর্টের আদেশে খুব খুশী এবং আমাদের শীর্ষ আদালতের ওপর বিশ্বাস আছে। বিচারপতিরা আমাদের প্রাথমিক দাবিগুলো পূরণ করেছেন।” কৃষ্ণনগরে প্রচারের সময় ব্রাত্য বসুকে সাংবাদিক রা জিজ্ঞেস করে এই ঘটনা তাদের আসন্ন নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে বলে। উত্তরে ব্রাত্য বলেন, ” সবকিছু নির্বাচনী লাভ এর জন্য করা হয় না। এটা মানুষের মৌলিক ইসু।”
২০১৬ এর দূর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগব্যবস্থার কথা ব্রাত্য বসুকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান যে তিনি সেইসময় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন না । তিনি আরো জানান যারা দূর্নীতির সাথে যুক্ত ছিল তারা সবাই এখন জেলে আছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় এ সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন,” “মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট গত সপ্তাহে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিজেপির ‘বিস্ফোরক’ নিক্ষেপকে নিষ্ক্রিয় করেছে। সত্যের জয় হয়েছে!” অন্যদিকে বিজেপি তৃণমূলের ওপর পালটা দোষারোপ করে যে তারা দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে সিবিয়াই তদন্ত বন্ধ করতে চেয়েছিল। বিজেপি নেতা শমীক ভট্যাচার্য এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন ,” “কমিশনের প্রয়োজন যোগ্য প্রার্থীদের থেকে যারা অন্য সব বিভাগেও অন্যায়ভাবে পদ পেয়েছেন তাদের থেকে আলাদা করা। এটি আইনি সমস্যা প্রতিরোধ করবে। অন্যায়ের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে। সিবিআই তদন্ত চলবে। রাজ্য সরকার তদন্ত বন্ধ করতে চেয়েছিল।”
অবশ্য এই রায় নিয়ে তৃণমূল খুশি হলেও শিক্ষকদের অনেকেই এ বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক শিক্ষক বলেন , ” রাস্তা ঘাটে বের হতে পারছি না । সকলেই ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে বলছে ‘চাকরী তো গেল মাস্টার’, এই সামাজিক সম্মানহানির দায় কার ? আমি তো স্বচ্ছ ভাবে পরীক্ষা দিয়েই নিয়োগ পেয়েছি । তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির কারনেই তো আমাদের এই অপদস্ত হওয়া । কয়েকজন অপরাধীকে আড়াল করার জন্য আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তৃণমূল । সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে তা আপাতভাবে স্বস্তি দিলেও এখনো যথেষ্ট অনিশ্চয়তা রয়েছে । অন্যায় হলে কোর্ট তো চুপ করে বসে থাকবে না যেটা হওয়ার ছিল সেটাই হয়েছে । তৃণমূলের বেপরোয়া দুর্নীতির জন্যই আজ আমাদের এই অবস্থা , তৃণমূলের উচিৎ সমস্ত শিক্ষক সমাজের কাছে এই অপরাধের জন্য ক্ষমা চাওয়া । ”