আজ দিল্লিতে কংগ্রেস একটি সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে। তারা বিজেপির উপর গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ এবং লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের আর্থিক ক্ষমতা জানবুঝে দুর্বল করার অভিযোগ আনে। এই সম্মেলনে মল্লিকার্জুন খার্গে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, সাধারণ সম্পাদক কে.সি. ভেনুগোপাল, মিডিয়া ইন-চার্জ জয়রাম রমেশ, এবং কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন উপস্থিত ছিলেন।
সোনিয়া গান্ধী অভিযোগ করেন যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কংগ্রেসকে আর্থিক ভাবে দুর্বল করে দেওয়ার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা চলছে । তিনি দলের তহবিল ফ্রিজ করা এবং দেওয়া দলের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যায় ভাবে করে টাকা তুলে নেওয়ার কথা বলেন। তবে এই সকল প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি দলের নির্বাচনী প্রচার ও কারযক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।
সুপ্রিম কোর্ট সাম্প্রতিক রায়ে ইলেক্টোরাল বন্ডগুলিকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে, তা উল্লেখ করে সোনিয়া গান্ধী বলেন যে এই প্রকল্পটির মাধ্যমে বিজেপি অনেক পরিকল্পনা করে তোলাবাজি করেছে । বিপরীতে আমাদের একাউন্টগুলি ফ্রিজ করা হয়েছে যাতে আমরা কোনো লেনদেন না করতে পারি ।
দিল্লি হাইকোর্ট গত সপ্তাহে ইনকাম ট্যাক্স আপিল ট্রাইবুনাল (আইটিএটি) –এ নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত বহাল রাখে যেখানে কংগ্রেসের আয়কর বিভাগের নোটিশ স্থগিত করার অনুরোধ বাতিল করা হয় । পিটিআই থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়কর বিভাগের আইনজীবী জানান যে ৬৫.৯৪ কোটি রুপি ইতিমধ্যে আদায় করা হয়েছে, মূল দাবি এবং সুদের মোট পরিমাণ ১৩৫.০৬ কোটি রুপি।
রাহুল গান্ধী দলের সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন, এবং বিজেপির এই অনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে তাদের নির্বাচনী কার্যকলাপ কতটা ব্যাহত হচ্ছে তা উল্লেখ করেন । তিনি বলেন যে , এর ফলে তারা নির্বাচনী প্রচারের জন্য রেলের টিকিট কেনার মতো সামান্য খরচও বহন করতে পারছে না। তিনি গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশন এবং আদালতগুলির নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেন । বলেন যে এর ফলে দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষমতা গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খার্গে বিজেপির কর্মকাণ্ডকে একপাক্ষিক নির্বাচন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে তুলে ধরেন , যা কংগ্রেসকে আর্থিকভাবে অক্ষম করে দিয়ে খেলার মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনৈতিক লড়াইয়ের ইঙ্গিত দেয় । তিনি দলের অ্যাকাউন্টগুলির ওপেন করে দেওয়া এবং আসন্ন নির্বাচনে ন্যায়সঙ্গত প্রতিযোগিতার জন্য আহ্বান জানান।
কংগ্রেস আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার এবং জনগণের কাছে তাদের এই বার্তা পৌঁছানোর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে । যার মারফতে তারা তাদের সঙ্গে হওয়া এই অবিচার এবং বিজেপির অনৈতিক পরিকল্পনা তুলে ধরবে । সেই উদ্দেশ্যে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি (পিসিসি) প্রেসিডেন্ট এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের দ্বারা আরও সংবাদ সম্মেলন এবং প্রচারের মাধ্যমে, দল তাদের সমস্যাগুলি তুলে ধরতে এবং সমর্থন জোগাড় করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে।