গ্যাং ওয়্যারে বিধ্বস্ত হাইতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এলিয়েল হেনরি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ডের পর ২০২১ সাল থেকে হাইতির নেতৃত্বে থাকা হেনরি বলেছেন, একটি অস্থায়ী কাউন্সিল নিয়োগের পর তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন। হেনরির শাসনামলে আঞ্চলিক ছোটো বড় গ্যাং গুলি তাদের শক্তি, প্রভাব, এবং সম্পদ ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি নিরাপত্তা মিশন পুলিশকে সহায়তা করার জন্য কেনিয়ার সমর্থন আদায় করতে তিনি সম্প্রতি কেনিয়া সফর করেন। কিন্তু, তার অনুপস্থিতিতে হাইতিতে সহিংসতা ভয়াবহভাবে বেড়ে যায়। আঞ্চলিক নেতারা দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাতে থাকায় ৭৪ বছর বয়সী এই নিউরোসার্জন পুয়ের্তো রিকোতে আটকে পড়েন।
হেনরি একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “কাউন্সিল গঠনের পরপরই আমার নেতৃত্বাধীন সরকার পদত্যাগ করবে। হাইতির জনগণকে আমাকে যে সুযোগ দিয়েছিলো তার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।” তিনি আরও বলেন,”আমি সমস্ত হাইতিবাসীকে শান্ত থাকতে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”
হাইতির সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলিতে উৎসবের দৃশ্য দেখা গেছে, লোকজন গানের তালে নাচছে এবং আকাশে আতশবাজি ছোঁড়া হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাইতিতে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের জন্য আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার ও মানবিক সাহায্য হিসাবে ৩৩ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে তহবিলটি অনুমোদন এবং স্থানান্তরে কত সময় লাগবে তা স্পষ্ট নয়। হাইতি নিজেদের অভ্যন্তরীণ সহিংসতার মধ্যে রয়েছে। রাজধানীতে সপ্তাহান্তে ব্যাপক গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সশস্ত্র লোকজন রাষ্ট্রপতি ভবন ঘেরাও করে রাখে। গ্যাং লিডাররা পালিয়ে যাওয়া রাজনীতিবিদদের আশ্রয়দাতা হোটেল মালিকদের হুমকি দিয়েছে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নতুন সরকারের দাবি উঠছে। যে গ্যাংগুলি দেশটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে তারা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাচার হওয়া অস্ত্রে সজ্জিত বলে জাতিসংঘ মনে করে। এই অস্থিতিশীলতার মধ্যে হাইতির ভবিষ্যৎ এখন খুবই অনিশ্চিত।