দিল্লির আদালত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে কথিত মদ নীতি কেলেঙ্কারির সংক্রান্ত অর্থ পাচারের মামলায় পাঠিয়েছে। ২১ মার্চ রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ইডি আরও রিমান্ড না চাওয়ার পরে রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতের বিশেষ সিবিআই বিচারক কাবেরি বাওয়েজা এই আদেশ দেন। ইডি কাউন্সেল বলেছেন, ” সেন্থিল বালাজি মামলায় সুপ্রীম কোর্টের রায় অনুসারে আরও হেফাজত চাওয়ার অধিকার সাপেক্ষে আমরা বিচার বিভাগীয় হেফাজতে চাইছি ” ।
ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় কেজরিওয়ালকে আদালতে পেশ করা হয়েছিল। 22 শে মার্চ, ট্রায়াল কোর্ট তাকে ছয় দিনের ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছিল, যা পরে আরও চার দিন বাড়ানো হয়েছিল।
কেজরিওয়াল ইডির জারি করা নয়টি সমন এড়িয়ে গেছেন। আম আদমি পার্টির নেতা মনীশ সিসোদিয়া এবং সঞ্জয় সিংও এই একই মামলায় অভিযুক্ত এবং বর্তমানে তারাও বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
কেজরিওয়াল তাঁর গ্রেপ্তারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জরুরি আবেদন করেছিলেন, যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।
তিনি এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দ্বারা জারি করা সমনকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে (ডিভিশন বেঞ্চ) আবেদন করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা চেয়ে আবেদনও করেছেন তিনি, আগামী 22 এপ্রিল এ বিষয়টি শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে ইডি রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছিল এবং তার বিরুদ্ধে সমন অমান্য করার অভিযোগ করেছিল। কেজরিওয়াল সমন এড়িয়ে গেছেন, দাবি করেছেন যে সেগুলি অবৈধ।
কেজরিওয়ালের এই 15 এপ্রিল পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী । চারিদিকে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন আপ সমর্থকরা ।
কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে রবিবার রাজধানীতে বিরোধী দলগুলি মিলে ইন্ডিয়া জোটের এক বিরাট সমাবেশের আয়োজন করে । রামলীলা ময়দানের এই ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ সমাবেশে কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত, প্রমুখ অংশ নেন। এনসিপি (এসসিপি) প্রধান শরদ পাওয়ার সহ অন্যরা।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়াল এবং ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেনও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
সুনিতা কেজরিওয়াল তার স্বামীর একটি বার্তা পড়ে শোনালেন, যেখানে বলা হয়েছে, “আমি ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের তরফ থেকে ছয়টি গ্যারান্টি পেশ করছি। প্রথমত, সারা দেশে কোনও বিদ্যুত কাটবে না। দ্বিতীয়ত, গরিব মানুষের জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ থাকবে। তৃতীয়ত, আমরা প্রতিটি গ্রামে সরকারি স্কুল তৈরি করব। চতুর্থত, প্রতিটি গ্রামে মহল্লা ক্লিনিক তৈরি করব। প্রতিটি জেলায় একটি করে মাল্টি-স্পেশালিটি সরকারি হাসপাতাল করব। সবাই বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবে। পঞ্চম, কৃষকদের ফসলের সঠিক দাম দেওয়া হবে। ষষ্ঠ, দিল্লির মানুষ 75 বছর ধরে অবিচারের সম্মুখীন হয়েছে। আমরা দিল্লিকে রাজ্যের মর্যাদা দেব। আমরা এই ছয়টি গ্যারান্টি পাঁচ বছরে সম্পূর্ণ করব । আমি সমস্ত পরিকল্পনা করেছি, এই গ্যারান্টির টাকা কোথা থেকে আসবে কীভাবে কাজ হবে সমস্তকিছু । জেলে আমার সংকল্প আরও দৃঢ় হয়েছে, শীঘ্রই বেরিয়ে আসব।