এবারের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-র শ্লোগান ‘আব কি বার ৪০০ পার’। সংখ্যাত্ত্বের বিচারে এনডিএ-র পক্ষে আদৌ এই ৪০০ পার করা সম্ভব ? না সম্ভব নয় । সেটা বিজেপি নিজেও জানে ৪০০ আসন পার করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় । তাহলে হঠাত এই শ্লোগান ? আসলে বিজেপি চাইছে এই স্লোগানকে সামনে রেখে ৩৬২ আসনের লক্ষ্যমাত্রাকে ছুঁতে । আসলে ৩৬২ টি আসন হল লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি। এই সংখ্যাটি মোদীর তৃতীয় বারের ক্ষমতায় আসার পরের আসল লক্ষ্য ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাক-নির্বাচনী জরিপে, এবার এনডিএর লোকসভায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে বিজেপি একক ভাবেই নিজের শক্তিতে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায়। রাজ্যসভায় ২৪৫ আসনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের মানে হল ১৬৪ আসন। বর্তমানে বিজেপির রাজ্যসভায় ৯৭ জন সদস্য রয়েছে এবং শাসক এনডিএর মোট ১১৭ টি । তবে, বিজেপি টেকনিক্যালি কখনও রাজ্যসভাকে সরকারের ইচ্ছাপূরণে বাধা হতে দেননি।
আরও একটি প্রধান বিষয় হল আগামী জনগণনার পর সংসদীয় আসন নির্ধারণের ডিলিমিটেশন। কেন্দ্র সরকারের সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা একটি হলফনামা অনুযায়ী, ডিলিমিটেশনের মাধ্যমে লোকসভার আসন সংখ্যা ৮৮৮ এ এবং রাজ্যসভার আসন সংখ্যা ৩৮৪ এ বৃদ্ধি পেতে পারে। এই প্রস্তাবনায় দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে প্রবল ভাবে বিরোধিতা করা হচ্ছে, কারণ এটি গো-বলয়ের রাজ্যগুলির পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করবে, যা বিজেপির সুবিধার জন্য হবে। তবে নির্বাচনী আসন বৃদ্ধির জন্য সংসদীয় অনুমোদন পাওয়া সহজ হবে না, যদি না ‘আবকি বার ৪০০ পার’ এনডিএর জন্য বাস্তবে পরিণত না হয়।
দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিজেপিকে দিল্লিকে আবার তার মূল ইউনিয়ন টেরিটরি অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা দিতে পারে, যদি তারা কেজরিওয়াল এবং তার আম আদমি পার্টিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় তবে তারা অবশ্যই চেষ্টা করবে দিল্লীর প্রাসনিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করার । যে কেজরিওয়ালকে তারা বাড়তে দেবে না ।
দিল্লি আগে ১৯৫৬ পর্যন্ত একটি বিধানসভা ছিল, যার পরে এটি একটি ইউনিয়ন টেরিটরি হয়ে যায়। এল কে আডভানি, তখন জন সংঘের একজন নেতা, ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত দিল্লি মেট্রোপলিটন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯১ সালের ষষ্ঠ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে দিল্লিতে আবার বিধানসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। যদি দিল্লি আবার ইউনিয়ন টেরিটরি হয়ে যায়, তাহলে কেজরিওয়ালের সামনে রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ দাঁড়াবে।