চিয়া সিড ফ্লাক্স সিড এরকম নানা রকমের সুপার ফুড তো খেয়েছেন, কিন্তু আপনার বাড়ির পাশেই থাকা সজনের বীজে কত গুণ আছে জানেন?চিয়া সিড বা ফ্লাক্স সিডের চেয়েও বহুগুণ শক্তিশালী এই সজনে বীজ । আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় অনেক যুগ ধরেই শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য সজনের বীজ ব্যবহার হয়ে আসছে। পুষ্টিগুণ আর আরোগ্যের শক্তিতে ভরপুর এই সজনের বীজ আজকের দিনে সমগ্র বিশ্বের লোক আলাদা ভাবে কিনে খায় । চলুন দেখে নেওয়া যাক সজনের বীজের নানা উপকারিতা এবং সেই সাথে বুঝে নেওয়া যাক সনাতন চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদে এই বীজের গুরুত্ব কতখানি।
ভিটামিন আর মিনারেল
সজনের বীজের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল আর আরও অনেক দরকারি পুষ্টি। ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আর প্রোটিন – সবই আছে এই বীজে। শুধু তাই নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও আছে প্রচুর, যা শরীরের নানারকম রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিকোণ থেকে
আয়ুর্বেদে সজনের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘দোষ’ সামঞ্জস্য বজায় রাখার ক্ষমতা আছে বলে সজনে বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। মূলত বাত ও কফ দোষ কমাতে সজনের ভূমিকা আছে, যার ফলে শরীরের ভারসাম্য ও সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত হয়। জল পরিশোধন করার গুণ আছে এই বীজে। শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতেও এটি অত্যন্ত কার্যকরী। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমশক্তি ভালো রাখতে, দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করতে সজনের বীজ আয়ুর্বেদে খুবই গুরুত্ব পায়।
হার্টকে সুস্থ রাখে
ব্লাড প্রেশার কমাতে সজনের বীজ খুব ভালো কাজ করে। তাই হার্টের সমস্যা কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে জিঙ্কের ভূমিকা আছে, আর সেই জিঙ্ক সজনের বীজে পাওয়া যায় প্রচুর। এছাড়াও ওলিক অ্যাসিডের উপস্থিতির জন্য সজনের বীজ খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ত্বক আর চুলের যত্নে
শরীরের ভেতরের উপকার ছাড়াও ত্বক আর চুলের জন্য সজনের বীজ আশীর্বাদস্বরূপ। এর তেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ময়েশ্চারাইজারে ভরপুর। ত্বকে লাগালে বয়সের ছাপ কমে, ব্রণ-ফুসকুড়ি কমায়, ত্বক ঝকঝকে হয়। চুলে লাগালেও একই ফল! চুলের জেল্লা, মজবুতি সবই বাড়ে।
আর্থ্রাইটিসের ব্যথা সারাতে
আর্থ্রাইটিস বা বাতের ব্যথা কমাতে সজনের বীজ অসাধারণ কাজ করে। এর প্রদাহরোধী ক্ষমতার জন্য ব্যথা কমে যায়।
হজমশক্তি ও ডিটক্সিফিকেশন
মৃদু রেচক হিসেবে কাজ করে সজনের বীজ। হজমশক্তি ঠিক রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য রুখতে সাহায্য করে। লিভার পরিষ্কার করতে এবং শরীরকে বিষমুক্ত করতে আয়ুর্বেদে সজনের বীজ অত্যন্ত কার্যকরী ।
কীভাবে খাবেন সজনের বীজ
কাঁচা বা রান্না করে, স্যুপ করে বা সালাদের সাথে এমনকি গুঁড়ো করেও খাওয়া যায় সজনের বীজ। খুব বেশি খাওয়ার দরকার নেই, দিনে কয়েকটি খেলেই যথেষ্ট।
সাবধানতা
উপকারী হলেও পরিমাণ মতো খাওয়া জরুরি। অতিরিক্ত খেলে পেট খারাপ হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের সজনের বীজ না খাওয়াই ভালো।