সুবিশাল সমুদ্র বড়ই রহস্যময় । কখন যে কি অবিশ্বাস্য ঘটনা এর মাঝে লুকিয়ে থাকে তা আগে থেকে বলা যায় না । তিমির পেটের ভিতর থেকে যে কেউ বেঁচে ফিরতে পারে এর থেকে আশ্চর্যের কি হতে পারে !! মাইকেল প্যাকার্ড সেই বিরল সৌভাগ্যবানেদের একজন যিনি তিমির পেটের মধ্যে গিয়েও বেঁচে ফিরেছিলেন ।
মাইকেল প্যাকার্ডের অভিজ্ঞতাটা যেকোনো অ্যাডভেঞ্চার সিনেমার থেকেও বেশি রোমাঞ্চকর। লবস্টার ধরার জন্য সমুদ্রের তলায় ডাইভ করতে নেমে হঠাৎ করেই অনুভব করেন যেন একটা দৈত্যাকার সামুদ্রিক প্রাণীর মুখে ঢুকে পড়েছেন তিনি। এটা কোনো গল্প নয়, এমন একটা দুঃস্বপ্নকে বাস্তবে পেরিয়ে এসেছেন মাইকেল।
সমুদ্রের তলায় লবস্টার খুঁজতে খুঁজতে চারপাশ হঠাৎ অন্ধকার হয়ে যায়। মনে হচ্ছিল যেন কিছু একটা তাকে চেপে ধরেছে। তিনি কোনো যন্ত্রের ধাক্কা খাননি, বরং অনেক শক্তিশালী একটা প্রাণীর সাথে সংঘর্ষ হয়েছে তার। মাইকেল ভাবলেন, নিশ্চয়ই কোনো বড় গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগেছে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বুঝতে পারলেন, তিনি যে অন্ধকার জায়গায় আছেন, সেটা নড়ছে! আসলে তিনি একটি হাম্পব্যাক তিমির মুখের ভেতরে চলে গিয়েছিলেন।
আতঙ্ক তাকে গ্রাস করে নিল। কিছুই করার ছিল না। পরিবারের কথা, জীবনের কথা চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল। কতক্ষণ এভাবে ছিলেন তিনি জানেন না, তবে হঠাৎই আলোর দেখা পেয়ে তিমির মুখ থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসেন। আসলে তিমির মুখটি অস্বাভাবিক রকমের বড় হলেও তাদের খাদ্যনালীটি খুবই সরু , তা দিয়ে একটা আস্ত মানুষকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় । তাই হজম করতে না পেরে তিমিটি প্যাকার্ডকে বমি করে দেয় , সত্যিই অকল্পনীয় একটা ব্যাপার!
অনেকেই এই কাহিনী শুনে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সত্যি কি তিমির পেটের ভেতর থেকে কেউ জীবিত বেরিয়ে আসতে পারেন? তেমন কোনো আঘাতের চিহ্নও নাকি তিনি পাননি। তবে মনে রাখতে হবে, সমুদ্র অনেক রহস্যময় জায়গা। হাম্পব্যাক তিমি মানুষকে আক্রমণ না করলেও, খাবারের সময়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, বিশেষজ্ঞরাও সেটাই বলছেন।
প্যাকার্ডের গল্প শুধুই বেঁচে ফেরার কাহিনী নয়, এটা মানুষের আশ্চর্য সাহস আর সমুদ্রের দৈত্যাকার জীবের মাঝে সম্পর্কেরও গল্প। এটা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এই প্রকৃতিতে আমরা কতটা ছোট্ট।