‘থ্রি ইডিয়টস’ চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল তাঁর জীবন ও কর্মকাণ্ডকে ঘিরে , তিনি সোনম ওয়াংচুক। এই লাদাখি উদ্ভাবক ও সমাজসেবী সোনম ওয়াংচুক লাদাখকে বিশেষ মর্যাদা ও রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে অনশনে বসেছেন। তিনি তাঁর দাবী নিয়ে এই প্রবল ঠান্ডায় বরফের মধ্যে টানা ২১ দিন ধরে অনশন করে চলেছেন ।
লাদাখ উপত্যকাটির জন্য ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তি চেয়েছিলেন ওয়াংচুক। এই বিশেষ মর্যাদা দিলে লাদাখ নিজেদের ভূমি রক্ষাসহ বেশ কিছু বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন লাভ করবে। ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বিলোপের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে কেন্দ্র যখন লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেয়, তখন থেকেই ওয়াংচুকসহ লাদাখবাসীরা এই দাবি জানিয়ে আসছে।
ওয়াংচুক অভিযোগ করেন যে চার বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দেবার পর কেন্দ্র সরাসরি তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন মোদি সরকার আমাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে এবং যদি এটি অব্যাহত থাকে তবে আগামী সমস্ত নির্বাচনে বিজেপির জন্য সুখকর অভিজ্ঞতা হবে না , আমাদের নিরন্তর আন্দোলন চলতেই থাকবে ।
ওয়াংচুক আরও জানান, যেখানে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণ গণতন্ত্র পেতে যাচ্ছে, সেখানে লাদাখ নয়াদিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে এবং আমলাদের শাসনের অধীনে থাকবে। তিনি বলেন, সরকার ভারতকে ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বলতে পছন্দ করে। অথচ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই সরকারই আবার লাদাখের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার অস্বীকার করে এবং এটিকে নয়াদিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত আমলাদের অধীনে রাখতে চায় ।
এদিকে কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স সোনম ওয়াংচুকের সমর্থনে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, এবং ‘বর্ডার মার্চ’ নামে একটি পদযাত্রা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে যাতে লাদাখের মৌলিক সমস্যাগুলি যেমন লাদাকের ভূমী জল জঙ্গল ও গ্লেসিয়ারের অধিকার ও তা রক্ষা এবং সীমান্ত বিবাদের কারণে কৃষিভূমি হ্রাস পাওয়ার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে । ওয়াংচুকের প্রতিবাদ শুধু রাজনৈতিক মর্যাদা নিয়ে নয়, বরং লাদাখের পরিবেশ রক্ষা এবং তাদের ভূমি এবং ভবিষ্যতের সিদ্ধান্তে মানুষের কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করা নিয়েও।