লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বামেদের পুনরুত্থান নিয়ে চিন্তিত বিজেপি তৃণমূল দুটি দলই। যে বাম দলের আসন সংখ্যা শূন্যতে নেমে গিয়েছে তারাই এবারের বাংলার লোকসভাতে বিরাট ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে । ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি অনুমান ভিত্তিক সার্ভে রিপোর্টে উঠে এসেছে বামেদের এই ভোট ব্যাঙ্কের উত্থান, এবারের লোকসভাতে তাদের ঝুলিতে যে বেশ কয়েকটি আসন যেতে চলেছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায় । পাশাপাশি কয়েকটি আসনে তো মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে বাম ও তাঁর মিত্র শক্তিরা । যা নিয়ে রীতিমত চিন্তায় তৃণমূল বিজেপি শিবির ।
খোদ প্রধানমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের জনসভা থেকে বামেদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । কেন হঠাৎ বামেদের নিয়ে এত মাথাব্যথা হলো প্রধানমন্ত্রীর । বিশেষ করে এ রাজ্যের মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার ফোকাসে এখন তৃণমূল আর বিজেপি সেখানে মিডিয়ায় ব্রাত্য হয়ে যাওয়া এই দলটাকে এত গুরুত্ব কেন দিয়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী ?
তৃণমূল আর বিজেপির চাপান উতরে সরগরম বাংলার রাজনীতি । টিভি খুললেই দেখা যাচ্ছে কখনও প্রধানমন্ত্রী কখনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চোখা চোখা বাণে বিদ্ধ করছে তৃণমূলকে , অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছিয়ে থাকবেন কেন? দুটি দলের হাতে রয়েছে প্রচুর অর্থ হেলিকপ্টার এবং আরো অনেক কিছু । প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বাড়তি সুবিধা পান ।
ক্ষমতা অর্থ আর প্রভাবে বলীয়ান এই দুই দল কাঁপিয়ে রেখেছে বাংলার ভোটের ময়দান । অন্যদিকে দুর্বল আর্থিক ক্ষমতা নিয়ে লড়ছে সিপিআইএম ও অন্যান্য বাম দল গুলি । ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে যেখানে তৃণমূল এবং বিজেপি উভয় দলই কোটি কোটি টাকা ফান্ডিং পেয়েছে সেখানে সিপিআইএম কেরলে ক্ষমতায় থাকার স্বত্বেও ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে কোনো টাকা নেয়নি ।
তাই আপাত অনুজ্জ্বল প্রচারে কেমন সাড়া ফেলেছেন সিপিআইএমের তরুণ মুখ সৃজন দীপ্সিতা সায়রা প্রতিকুররা আর অভিজ্ঞ সুজন বা সেলিমেরাই নিচ্ছেন কোন স্ট্রাটেজি ?
বিজেপির প্রচারের ক্ষেত্রে যেমন পধান মুখ নরেন্দ্র মোদী আর তৃণমূলের ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় , তেমনই সিপি আই এমের বলতে হবে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম । এই প্রজন্মের জনপ্রিয় নেত্রী মীনাক্ষী কে প্রচারে সারা বাংলায় ঘোরানোর জন্যই এই লোকসভা ভোটে তাঁকে প্রার্থী তালিকায় রাখেনি সিপিআইএম। মীনাক্ষী দের ইনসাফ যাত্রা সাফল্য দেখে কিছুদিন আগে চমকে গেছিল গোটা রাজ্য । তৃণমূলের জনগর্জন সভার চেয়েও চেয়েও অনেক বেশি লোক হয়েছিল সিপি আই এমের তরুণ ব্রিগেডের ডাকা জনসভায় । প্রশ্ন উঠেছিল এত মানুষ সিপি আই এমকে ভোট দেবে তো ?
মীনাক্ষীর প্রতিটি সভায় তাঁর কথা শুনতে আসছেন বহু মানুষ বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা । তাঁর বক্তবে প্রধান্য পাচ্ছে স্বাস্থ্য খাদ্য বাসস্থান কর্মসংস্থানের মত বেসিক নিডস গুলি । আর এতেই মজেছেন তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা । এখন দেখার বামেদের এই ভিন্ন ধারার প্রচারের স্ট্রাটেজি কতটা কাজে লাগে ইভিএম বক্সে ।
আর সহজ সরল প্রচার কৌশলই ভয় ধরিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির অন্দরে ।