প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার এবিপি নিউজ এর এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর জীবন নিয়ে সিনেমা তৈরি হওয়ার আগে তাকে ভারতের বাইরে কেউ জানত না।নিউজ চ্যানেলের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে, প্রধানমন্ত্রী বললেন: “গত 75 বছরে, মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে পুরো বিশ্বকে জানানো কি আমাদের দায়িত্ব ছিল না? আমি দুঃখিত কিন্তু কেউ তাকে জানত না. গান্ধী সিনেমাটি তৈরি হওয়ার পরেই মানুষ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কৌতূহলী হতে শুরু করেছিল।” তিনি সম্ভবত রিচার্ড অ্যাটেনবারোর 1982 সালের গান্ধীর জীবনীমূলক চলচ্চিত্রের কথা উল্লেখ করছেন।
তিনি এও বলেছেন যে গান্ধীর কাজ দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী কর্মী নেলসন ম্যান্ডেলা এবং আমেরিকান নাগরিক অধিকার কর্মী মার্টিন লুথার কিং এর সাথে সমান ছিল। কিন্তু, কংগ্রেসের অক্ষমতার ফলে সারাবিশ্বের লোকের কাছে গান্ধী এই নামটাই পৌঁছেছে অনেক পরে বলে মনে করেন তিনি।মোদি বলেন,”গান্ধী, এবং গান্ধীর মাধ্যমে, ভারতের দিকে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত ছিল। গান্ধীর দর্শন আজ বিশ্বে জর্জরিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হতে পারে।”
মোদীর ওই মন্তব্যের জেরে লোকসভা ভোটের আবহে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।এক্স হ্যান্ডলে পোস্টে রাহুল গান্ধী লিখেছেন, ‘‘মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে জানতে শুধুমাত্র ‘সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান’-এর এক জন পড়ুয়াকে ছবিটি দেখতে হবে।’’ এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাহুল বুধবার মোদীর স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের মন্তব্য, ‘‘মহাত্মা গান্ধীর উত্তরাধিকারকে কেউ যদি আঘাত করে থাকেন, তবে তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সরকারই বারাণসী, দিল্লি এবং আমদাবাদে গান্ধীবাদী প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করেছে।’’
মোদীর ওই মন্তব্যের জেরে লোকসভা ভোটের আবহে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।এক্স হ্যান্ডলে পোস্টে রাহুল গান্ধী লিখেছেন, ‘‘মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে জানতে শুধুমাত্র ‘সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান’-এর এক জন পড়ুয়াকে ছবিটি দেখতে হবে।’’ এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাহুল বুধবার মোদীর স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের মন্তব্য, ‘‘মহাত্মা গান্ধীর উত্তরাধিকারকে কেউ যদি আঘাত করে থাকেন, তবে তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সরকারই বারাণসী, দিল্লি এবং আমদাবাদে গান্ধীবাদী প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করেছে।’’
दिमागी दिवालियापन से पिडित हैं ये एंटायर पोलिटिकल साइंस के छात्र .. ये जानबुझकर ये सब बोल रहें हैं ताकी जनता का ध्यान बठका सकें ! pic.twitter.com/LgHYs3HJz8
— Priyamwada (@PriaINC) May 29, 2024
এছাড়াও,তৃণমূলের দলীয় এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে মোদীকে ট্যাগ করে তাঁর সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘‘মহাত্মা গান্ধীকে কেউ চেনে না, এমন মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’
"Koi nahi jaanta Mahatma Gandhi ko" – PM @narendramodi.
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) May 29, 2024
In an unfortunate turn of events, PM Narendra Modi questioned the legacy of Mahatma Gandhi, the tall figure of the Indian Independence Movement who is respected and revered all across the world.
Modi ji, Mahatma Gandhi… pic.twitter.com/FMAHfSpgi7
তাঁর এই উদ্ভট মন্তব্য কে ঘিরে ব্যাঙ্গের সুর প্রবল হয়ে উঠেছে, রাজনৈতিক বিরোধী দলের ব্যক্তিবর্গ থেকে অনেক বুদ্ধিজীবী নানান উপায়ে তাঁর মন্তব্য কে ঘিরে ট্রোল করে নাজেহাল করছেন। বেশ কিছু মিমও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যার কোনটায় দেখা যাচ্ছে, গান্ধীর কার্টুন ফিগার বসে পরে কপাল চাপড়ে বলছে,’hey Ram’, আবার কোনোটায় দেখা যাচ্ছে মোদির কার্টুন ফিগার দাবি করছে যে,’nobody knew Nehru till I became PM!’ ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের তরফে আরও এক টুইট এ এই বিষয়কে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে আমরা শ্রীঘ্রই প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতা কামনা করি।
যদিও এসব বাদ দিয়ে আমরা বাস্তবের দিকেও তাকাই তাহলেও দেখব যে, অক্টোবর 2019 সালে, গান্ধীর জন্মের 150 তম বার্ষিকী উপলক্ষে, তুরস্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইরান, উজবেকিস্তান এবং ফিলিস্তিন সহ 87টি দেশ নেতাকে স্মরণ করার জন্য পোস্টাল স্ট্যাম্প প্রকাশ করেছিল। 2008 সাল পর্যন্ত, মোট 150টি দেশ গান্ধীকে সম্মান জানাতে পোস্টাল স্ট্যাম্প জারি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাও তার জীবনে গান্ধীর প্রভাব সম্পর্কে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন। তার বই এ প্রমিজড ল্যান্ডে ওবামা লিখেছেন যে ভারতের প্রতি তার মুগ্ধতা মূলত গান্ধীকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছিল, যার “ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সফল অহিংস অভিযান অন্যান্য ছিন্নমূল, প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য একটি আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে”। এর দ্বারা বোঝাই যায় গান্ধীর ও তাঁর নীতির জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী কতখানি, তাও এরকম উদ্ভট ও আলটপকা মন্তব্য করে ফেলে ট্রোলের আক্রমনে লোকসভা নির্বাচনের শেষদিকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি এই ঘটনার কতখানি যুক্তিসম্মত ব্যাখ্যা দেয় সেটাই দেখার।