ভারতের গাড়ি বাজারে বরাবরই একচেটিয়া আধিপত্য মারুতি সুজুকির। তবে ইলেকট্রিক গাড়ির দৌড়ে তারা একটু দেরিতেই নেমেছে। তবে দেরিতে হলেও, মারুতি যে ধামাকা দিয়ে বাজারে আসতে চায়, সেটা বোঝাই যাচ্ছে তাদের eWX মডেল দেখে। WagonR এর মতো লম্বা ডিজাইন আর সাশ্রয়ী মূল্যের এই eWX নাকি টাটা টিয়াগো ইভি আর এমজি কমেট ইভি এর প্রতিদ্বন্দন্দী হয়ে উঠবে। এবার একটু গভীরে গিয়ে দেখা যাক এই গাড়ি আসলে কী নিয়ে আসছে আর ভারতীয় বাজারে এর ভবিষ্যৎ কী?
🚗 ইলেকট্রিক গাড়ির বাজারে মারুতি সুজুকি:
eVX কম্প্যাক্ট SUV আর eWX হ্যাচব্যাক মডেল দিয়ে মারুতি সুজুকি বুঝিয়ে দিতে চাইছে যে, ইলেকট্রিক গাড়ির বাজারেও তারা কারো থেকে পিছিয়ে নেই। দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে, আর সরকারও এদিকে জোর দিচ্ছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে মারুতির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। eWX এর লক্ষ্য হলো সাধারণ মানুষের নাগালে ইলেকট্রিক গাড়ি পৌঁছে দেওয়া।
🛋️ আকর্ষণীয় ডিজাইন:
eWX দেখতে অনেকটা WagonR এর মতো, তবে আধুনিক ডিজাইনের ছোঁয়ায় সেটাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। সামনের বাম্পারের ষড়ভুজ ডিজাইন, আয়তাকার LED লাইট, সব মিলিয়ে বেশ ফিউচারিস্টিক লুক। ভিতরেও আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে। ড্যাশবোর্ড, স্টিয়ারিং হুইল, এমনকি ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম সবকিছুতেই মিনিমালিস্টিক ডিজাইনের ছাপ। সামনের সিটের মাঝে থাকা কন্ট্রোল হাব থেকে সবকিছু সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। নিয়ন হলুদ রঙের ব্যবহার গাড়ির ভিতরের পরিবেশকে করে তুলেছে আরও প্রাণবন্ত।
🌟 টেকনিক্যাল দিক:
এখন পর্যন্ত eWX সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা না গেলেও, ধারণা করা হচ্ছে একবার চার্জ দিলে এই গাড়ি অন্তত ২৩০ কিলোমিটার চলবে। শহরে চলাচলের জন্য এটা যথেষ্ট। তবে মারুতি হয়তো আরও বেশি রেঞ্জের মডেলও বাজারে আনতে পারে।
মারুতির লক্ষ্য হলো গাড়ির বেশিরভাগ যন্ত্রাংশ দেশেই তৈরি করা। এতে দাম অনেক কমে যাবে। তারা ব্যাটারি প্রযুক্তির দিকেও কাজ করছে, যাতে খরচ আরও কমে। সব মিলিয়ে, একটা সাশ্রয়ী মূল্যের, কার্যকরী ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে আনতে মারুতি সব দিক থেকেই চেষ্টা করছে।
💰 দাম:
eWX এর দাম নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না এলেও, ধারণা করা হচ্ছে দাম শুরু হবে ৮-১০ লাখ টাকা থেকে। এই দামে এটা বাজারে থাকা টাটা টিয়াগো ইভি আর এমজি কমেট ইভি এর প্রতিদ্বন্দন্দী হয়ে উঠবে। এতে করে সাধারণ মানুষের কাছেও ইলেকট্রিক গাড়ি আরও সহজলভ্য হবে।
ইলেকট্রিক গাড়ির দুনিয়ায় মারুতি হয়তো একটু দেরিতে এসেছে, কিন্তু তাদের বিশাল ডিলার নেটওয়ার্ক আর ব্র্যান্ড ভ্যালু তাদের অনেক এগিয়ে রাখতে পারে। তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। দেশে এখনও চার্জিং স্টেশনের অভাব রয়েছে, সেটা একটা বড় বাধা। তবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টাও করছে মারুতি। এছাড়াও ব্যাটারি প্রযুক্তির উন্নতি হলে eWX এর দাম আরও কমতে পারে।
eWX ভারতের ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। এর সাশ্রয়ী মূল্য, আকর্ষণীয় ডিজাইন আর ব্যবহারিক ফিচারগুলো অনেকের পছন্দ হবে বলেই আশা করা যায়। এখন শুধু অপেক্ষা, মারুতি কবে এই গাড়ি বাজারে আনছে আর বাস্তবে কেমন পারফর্ম করে, সেটা দেখার।