কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ শিলায় টানা ৪৮ ঘন্টা ধ্যানমগ্ন নরেন্দ্র মোদি। এ যেন এক নতুন ধরনের ধ্যান। চারিদিক ক্যামেরার মাঝে চলছে ভগবানের আরাধনা।
প্রাচীনকালে ঋষি-মুনিরা ধ্যান করত নির্জনে যাতে তাদের তপস্যা এ কেউ কোনোরকম ব্যাঘাৎ না ঘটাতে পারে। কিন্তু এমন কেউ দেখেছে কখনো যে একঝাক ক্যামেরার মাঝে কেউ তপস্যা করছে। আদৌকে সেটা তপস্যা না ভারতের মানুষকে ধর্মের সুরসুরি দিয়ে ভোটগ্রহণের চেষ্টা?? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তো তাই বলছে।
Nine camera angles in a 28 second video of PM Modi mediating at Vivekananda Rock Memorial. 🥹pic.twitter.com/YUgBITZB5t
— Mohammed Zubair (@zoo_bear) May 31, 2024
লোকসভা ভোট ২০২৪ চলাকালীন মোদি কত যে অদ্ভুত অদ্ভুত মন্তব্য করেছে তার ইয়ত্তা নেই। এক চ্যানেলে ইন্টারভিউ তে সে বলে নাকি গান্ধী কে কেউ নাকি “গান্ধী” সিনেমা হওয়ার আগে চিনতই না। তিনি বারবার চ্যানেলের ইন্টারভিউতে নিজেকে ভগবানের পাঠানো দূত বলে পরিচয় দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা কোনো মিডিয়াই তার এই অদ্ভুত এবং আপত্তিকর মন্তব্যতে একটা পালটা প্রশ্নও করেনি। এবং আজ ও সমস্ত মিডিয়া চ্যানেল গুলিই মোদির ধ্যান এর ভিডিও কভার করতে আরম্ভ করেছে।
কেন হঠাত কন্যাকুমারী? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে আরএসএস বিজেপির কখনোই দক্ষিণ ভারতে গ্রহণযোগ্যতা উত্তর ভারতের মত নয়। তাই বিজেপিকে প্রতিবারই দক্ষিণ ভারতের নির্বাচনের ক্ষেত্রে বড়সড় ধাক্কা খেতে হয়। এর একটি কারণ যেমন বিজেপির এই মেরুকরণের রাজনীতি সেই সমস্ত রাজ্যগুলিতে কাজ করে না তেমনই দক্ষিণ ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে আরএসএস এর হিন্দ-হিন্দু-হিন্দুস্তান এর ন্যারেটিভ একেবারেই যায় না। তাই দক্ষিণ ভারতে নিজেদের ক্ষমতায়ন করতে মোদি খুব জোরকদমেই প্রচার চালিয়েছে।
India’s sunrise pic.twitter.com/UnyWdtgadJ
— BJP (@BJP4India) May 31, 2024
বিবেকানন্দকে সর্বক্ষণ টার্গেট করে নিজের প্রচার চালিয়েছে বিজেপি। বিবেকানন্দের সর্বধর্মসম্প্রীতি থেকে নব্যবেদান্তের মূল ভিত্তি সবকিছুকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র বিবেকানন্দের হিন্দু সন্ন্যাসী পরিচয় টাকে ব্যবহার করে নিজের প্রোপাগান্ডা প্রচার করে গেছে আরএসএস আর সেই প্রোপাগান্ডা কে নির্বাচন প্রচারে ব্যবহার করেছে বিজেপি। কিন্তু কন্যাকুমারী কে বাছার কারণ শুধু বিবেকানন্দ নয় একনাথ রাণাডে ও বটে। একনাথ রাণাডে ছিলেন একজন আরএসএস এর কর্মকর্তা যিনি কন্যাকুমারীতে বিবেকানন্দ রক প্রতিষ্ঠা এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মোদি তার সাহচর্যে সঙ্ঘের হয়ে অনেকদিন কাজ করেছেন। তার স্মৃতিতেও মোদির এই কন্যাকুমারীতে ধ্যনে বসা বলে মনে করছেন অনেকেই।