ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ও রাশিয়ার সর্বশেষ নির্বাচনে পুতিনের বিরাট জয়ের ফলে আবার নতুন করে গোটা বিশ্ব জুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে । রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক বিবৃতিতে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনাকে স্বীকার করলেও ইউক্রেনে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন।
রাশিয়ার সর্বশেষ নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর পুতিন পশ্চিমা দেশগুলির সাথে সরাসরি সংঘাতের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ন্যাটোর যা আচারণ তাতে এ ধরনের পরিস্থিতি বিশ্বকে একটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা কারোরই পক্ষেই মঙ্গলজনক হবে না । ইউক্রেনে সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি এবং সীমান্ত এলাকায় সৈন্য সমাবেশের মধ্যেই পুতিনের এই হুঁশিয়ারি এসেছে।
এদিকে, রাশিয়ার কারাগারে বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনির রহস্যজনক মৃত্যু এই ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। পুতিন নাভালনির মৃত্যুকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের কারাগারেও এমন ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে নাভালনিকে নিয়ে বন্দী বিনিময়ের আলোচনা তার মৃত্যুর কয়েকদিন আগেই হয়েছিল।
এই নির্বাচনে পুতিন ৮৭% এর বেশি ভোট পেয়েছেন। তবে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হওয়া, বিরোধী দলগুলির ওপর নিপীড়ন এবং মিডিয়ার ওপর সেন্সরশিপের অভিযোগ তুলেছেন। পুতিন অবশ্য তার এই জয়কে রাশিয়ার জনগণের সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে দেখছেন এবং জানিয়ে দিয়েছেন যে রাশিয়া ভয় পায় না।
নির্বাচনী ফলাফল পুতিনের ক্ষমতা আরও মজবুত করেছে এবং এর ফলে তাকে দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘকালীন নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। যদিও রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ন্যাটো সহ গোটা রাশিয়া-বিরোধী গোষ্ঠী আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী হচ্ছে।
পুতিনের এই মন্তব্যগুলি থেকে রাশিয়ার আগ্রাসী ভঙ্গি প্রকাশ পাচ্ছে , যা যথেষ্ট আতঙ্কের । ইউক্রেনে ন্যাটোর কর্মীদের উপস্থিতি এবং রাশিয়াকে সুরক্ষিত রাখতে একটি “স্যানিটারি জোন” তৈরির ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন।
বিশ্ব উদ্বেগের সাথে তাকিয়ে আছে পুতিনের বর্ধিত মেয়াদের এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অবস্থানের উপর।