মোরাদাবাদ জেলায় একটি নির্বাচনী ব়্যালিতে BJP প্রার্থী পরমেশ্বরলাল সাইনির হয়ে সম্বল লোকসভা আসনের জন্য প্রচারে গিয়ে যোগি আদিত্যনাথ বলেন কংগ্রেস নির্বিচার গো হত্যা করার অনুমতি দিয়ে দেবে।তাদের ম্যানিফেস্টোতে ও নাকি এমনটাই লেখা আছে। হিন্দুরা গরু কে মাতা বলে পুজো করেন কিন্তু কংগ্রেসের আমলে মুসলিমরা নির্বিচারে গো-হত্যা করে গো-মাংস ভক্ষণ করবে, এমনটাই দাবি যোগী আদিত্যনাথের।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথার সুর ধরেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রচার সভা থেকে বলেন কংগ্রেস নাকি দেশের সমস্ত সম্পদ মুসলিমদের মধ্যে ভাগ করে দেবে। শুধু তাই নয়, রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে স্ত্রীধন বিলিয়ে দেবে কংগ্রেস, কারোর বাড়ি তে চারটি ঘর থাকলে দুটি নাকি নিয়ে নেবে কংগ্রেসে… এমন সব কথাই নাকি লেখা আছে কংগ্রেসের ম্যানিফেস্টোতে। উত্তরপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী এখানেই থেমে থাকেনি। তিনি বলেছেন ,” ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এইসবই করার চেষ্টা করে গিয়েছে কংগ্রেস। SC/ST কিংবা OBC-দের জন্য যে সংরক্ষণ রয়েছে তার থেকে মুসলিম কোটা দিতে চেয়েছিল কংগ্রেস। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং দাবি করেছিলেন , দেশের সম্পদেসর্বাধিক অধিকার মুসলিমদের। “
গোহত্যা এবং গো মাংস ভক্ষণ নিয়ে যোগী আদিত্যনাথ নির্বাচনী জনসভা থেকে শুক্রবার জানান, “‘এই লজ্জাহীন ব্যক্তিরা গোরু খাওয়ার অধিকার করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা গোরুকে মাতৃরূপে পুজো করি। এরা কষাইদের হাতে গোমাতাকে তুলে দিতে চাইছে। এটা কি ভারতের মানুষ মেনে নেবে?” কংগ্রেসের ম্যানিফেস্টোতে গো-হত্যা বা গো মাংস ভক্ষণ এর সম্পর্কে কোনো কথা লেখা না থাকলেও ভারতীয় সংবিধানে প্রত্যেক মানুষকে নিজের খাদ্যগ্রহণের ও ধর্মপালনের স্বাধীনতা দেওয়া আছে ২১ নম্বর ধারায়। ভারতের কোনো রাজ্যেই গো-মাংস ভক্ষণ বে-আইনি নয়। উপরন্তু যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশই গো-হত্যা তে সব রাজ্যের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করে আছে। ইলেক্টরাল বন্ড এর তথ্য সামনে উঠে আসায় দেখা গেছে বিজেপির ভান্ডারে অর্থের অনেকটাই গো-মাংস রফতানি কারক সংস্থা থেকেই এসেছে। তাও নাকি কংগ্রেস গোহত্যার অনুমতি দেবে… এমনটাই তার অনুগামীদের জানান যোগ্যী আদিত্যনাথ।
যোগী রাজ্যে বে-আইনি কাজগুলোর কীভাবে ব্যপক সাধারণীকরণ ঘটেছে দেখবার মত। ভারতে কোনো দোষীকে শাস্তি প্রদানের জন্য বর্তমান উপযুক্ত আইন-আদালত ব্যবস্থা। কিন্তু যোগী রাজ্যে চলে এসেছে “বুলডোজার-বিচার”। শুধু তাই নয় এই ব্যবস্থাকে ব্যপক ভাবে মহিমান্বিত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। কোনো হিন্দু ফান্ডামেন্টালিস্ট গোষ্ঠী কোনো গরীব মুসলিম কে পিটিয়ে রাস্তায় মেরে ফেলছে… তাতে পুলিশ গিয়ে সেই মুসলিম কে ধরেই জেলে পুরে দিচ্ছে। সুকুমার রায় এর এক কবিতা মনে পড়ে যায়।
” শিব ঠাকুরের আপন দেশে,
আইন কানুন সর্বনেশে !
কেউ যদি যায় পিছ্লে প’ড়ে
প্যায়দা এসে পাক্ড়ে ধরে,
কাজির কাছে হয় বিচার—
একুশ টাকা দণ্ড তার ৷৷”