রথিবালার মৃত্যুর পেরিয়েছে মাত্র দুদিন, আজ অনুষ্ঠিত হল ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। এই ষষ্ঠ দফার ভোটেই চোখে জল নিয়ে লাইনে দাঁড়ালেন নন্দীগ্রামের মৃত বিজেপি কর্মী রথিবালা আড়ির মেয়ে সঞ্জু। ভোট দিয়ে বেরিয়ে বললেন, “ইভিএমেই মায়ের মৃত্যুর জবাব দিচ্ছি।”
গত বুধবার ,22 মে, ওইদিন দুষ্কৃতীদের হাতে বিজেপি কর্মী রথিবালা আড়ি খুন হন।ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায় নন্দীগ্রাম আবারও শিরোনামে উঠে আসে, এবং অভিযোগের মুখে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল। সেই ঘটনার দুদিনের মাথাতেই গনতান্ত্রিক উৎসব, লোকসভা নির্বাচন নন্দীগ্রামে। মায়ের মৃত্যুর টাটকা ক্ষত বুকে করেই রথিবালা কন্যা সঞ্জু আসলেন ভোট দিতে নন্দীগ্রামের গড়চক্রবেড়িয়ার মনসাবাজার এলাকার বুথে। অন্যরা তাকে দেখে আগে জায়গা ছেড়ে দিলো ভোট দিতে, এবং সজল নয়নে ভোটদান সম্পন্ন করলেন তিনি।
ভোট দিয়ে বেরিয়ে এদিন চোখ মুছতে মুছতে সঞ্জুদেবী বলেন, “ইভিএমেই মায়ের মৃত্যুর জবাব দিলাম।” তিনি আরও বলেন, “গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছে। বাড়িতে দুই দাদা, বউদি আছে। বড়দা কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি। আমি ভোট দিয়ে গেলাম। এর পর একে একে পরিবারের সবাই ভোট দেবেন।” এর পর বুথ ছাড়েন সঞ্জু।
দিন দুয়েক আগে অর্থাৎ ভোট প্রচারের শেষলগ্নে সোনাচূড়ার মনসাপুকুর বাজার এলাকায় রাত পাহারা দিচ্ছিলেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। সেই সময়ই রাত ২টো নাগাদ সশস্ত্র বাইক বাহিনী বিজেপি কর্মীদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপে রথিবালা আড়ি রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। মাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন ছেলেও। হাসপাতালে নিয়ে গেলে রথিবালাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
কুপিয়ে খুনের নৃশংসতার জবাব ভোট, আবারও এটাই প্রমাণ করে যে গণতন্ত্র পুরোটা এখনও ভন্ডামিতে ভরে ওঠেনি, সাধারণেরা এখনও বিশ্বাস রাখে ভোট প্রক্রিয়ায়। এখনও সাধারণ মানুষ ভোটার মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তারই দৃষ্টান্ত তুলে ধরলেন আজ রথিবলা কন্যা সঞ্জু।