ভারত সেবাশ্রমের বেলডাঙা শাখার অধ্যক্ষ কার্ত্তিক মহারাজ (স্বামী প্রদীপ্তানন্দ) এর নেতৃত্বে গেরুয়া বসন গায়ে, খালি পায়ে কলকাতার রাজপথে নামলেন সাধু-সন্তেরা। মুখ্যমন্ত্রীর সাধু সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদে বাগবাজার থেকে হেঁটে সিমলায় স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে জড়ো হন সাধু-সন্তেরা। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে তীব্র নিন্দা করে বিজেপির তালে তাল মেলালেন কার্ত্তিক মহারাজ।
সম্প্রতি ভারত সেবাশ্রম , ইষ্কন এবং রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে মনে আঘাত লাগে সাধু-সন্ত এবং ভক্তদের। তাই এর বিরোধিতা করলে বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ কার্ত্তিক মহারাজ পড়ে তৃণমূল নিশানায়। বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের আশ্রমে হামলা হতে পারে— এই উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্টে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করার কথা জানিয়েছিলেন কার্ত্তিক মহারাজ। মিছিলের মধ্যে আজ কার্ত্তিক মহারাজ বলেন, ” ‘‘বাংলায় তৃণমূলের রাজ। বাংলারই এক তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর প্রকাশ্য জনসভায় বলছেন, ‘আমরা এখানে ৭০ শতাংশ। হিন্দুরা ৩০ শতাংশ। হিন্দুদের ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব।’ আর মুখ্যমন্ত্রী আমায় নিয়ে যে মন্তব্য করছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশানা করে এবং মিছিলের কারণ ও দাবি সম্পর্কে কার্ত্তিক মহারাজ বলেন, ” ‘‘ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ইস্কন সম্পর্কে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই এই মিছিলে এসেছেন।” মহারাজ আরও বলেন, ” আজ ধর্ম সঙ্কটে। সাধু-সন্তেরা রাজপথে নেমে এসেছেন। হাজার হাজার মানুষ সাধু-সন্তদের যে ভাবে সম্মান দেখিয়েছেন তাতে আমরা চিরকৃতজ্ঞ।” মোদির নামে প্রশংসার ঝড় বইয়ে দিয়ে মহারাজ সেদিন বলেন,” ‘প্রধানমন্ত্রী বিজেপির নন। তিনি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। আমরা বহু সৌভাগ্যবলে এমন এক জন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। এই কথা বলব না? এ কথা দ্বিধাহীন ভাবে মুক্তকণ্ঠে বলব’
কার্ত্তিক মহারাজের সাথে মুখ্যমন্ত্রীর এরূপ বচসার সূত্রপাত গত শনিবারে। নির্বাচনী জনসভায় কার্তিক মহারাজের নাম করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্ত্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করে দেশটার সর্বনাশ করছে।” এই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। যদিও মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করেন পরে যে সব সাধু সম্পর্কে তিনি এরূপ মন্তব্য করেননি। কিছু সাধু সম্পর্কে করেছেন যাদের মধ্যে অন্যতম কার্ত্তিক মহারাজ।